নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সমুদ্র,শুধু একটি জলরাশি নয়, এক জীবন্ত জাদুঘর, যেখানে প্রতিটি ঢেউ বয়ে আনে অজানার বার্তা। আমরা হয়তো প্রতিদিন সমুদ্র দেখি, তার শব্দ শুনি, তবুও তার গভীরতা, তার অন্তর্নিহিত রহস্য,আমাদের দৃষ্টির বহু বাইরে।
বিশ্বের ৭১ শতাংশ জুড়ে রয়েছে এই সমুদ্র।বলা হয়, চাঁদের পৃষ্ঠের চেয়েও কম জানি আমরা সমুদ্রের তলদেশ সম্পর্কে। এর গহীনে এমন সব প্রাণী আছে, যাদের রূপ দেখে আধুনিক বিজ্ঞানও হতবাক। কেউ কেউ তো বলে, এ যেন অন্য কোনো গ্রহের জীব!
২০১৮ সালে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এক প্রজাতির অক্টোপাস, যার আকার ছোট্ট, রং হালকা গোলাপি আর চোখ দু’টি অনেকটা মানুষের মতো। এই অক্টোপাসকে তারা মজা করে নাম দিয়েছেন—“ডাম্বো অক্টোপাস”। এমন অনেক প্রাণীর অস্তিত্ব আছে সমুদ্রে।
গভীর সমুদ্র থেকে মাঝেমাঝেই ভেসে আসে একেকটি ‘অজানা শব্দ’। ১৯৯৭ সালে ধরা পড়ে এক রহস্যময় আওয়াজ,যার উৎস আজও কেউ সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেনি। অনেকে বলে এটা বিশাল আকারের কোনো প্রাণীর ডাক, আবার কেউ বলে ভূ-গর্ভস্থ কোন পরিবর্তনের প্রতিফলন।
আরো বিস্ময়কর হলো, সমুদ্রের নিচে পাওয়া যাচ্ছে প্রাচীন শহরের নিদর্শন। ভারত মহাসাগরের তলদেশে পাওয়া গেছে ‘ডুবে যাওয়া দ্বারকা’, জাপানে ‘ইয়োনাগুনি মনুমেন্ট যা দেখে মনে হয়, এক সময় সমুদ্রের নিচে ছিল গর্বিত কোনো সভ্যতা। এই শহরগুলো কবে, কীভাবে ডুবে গেল তা আজও রহস্য।
‘বারমুডা ট্রায়াঙ্গল’এর মতো স্থান যেন সমুদ্রকে আরও বেশি রহস্যময় করে তোলে। শত শত জাহাজ ও উড়োজাহাজ নিখোঁজ হয়েছে এখানে।
এই বিশাল নীল দুনিয়া যেন এক নীরব পর্যবেক্ষক, আমাদের জানার আগ্রহকে প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়। আমরা জানি, আমরা জানি না।
সমুদ্রের দিকে তাকালে মনে হয় এ এক বিস্ময়কর আয়না, যেখানে প্রতিফলিত হয় মানুষের সীমাবদ্ধতা, আর প্রকৃতির অপার শক্তি।