নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ঐতিহাসিক স্থাপনা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর আধুনিক বিনোদনের অপূর্ব সমন্বয়ে বগুড়া জেলার পর্যটন খাত ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে এক বৈচিত্র্যময় ভ্রমণ অভিজ্ঞতায়। দিন দিন এখানে বেড়ে চলেছে পর্যটকদের ভিড়, তৈরি হচ্ছে নতুন স্পট, বাড়ছে ব্যবসা, আর সৃষ্টি হচ্ছে নতুন সম্ভাবনা।
প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন মহাস্থানগড় নিয়ে দেশের ইতিহাসভিত্তিক পর্যটকদের আগ্রহের কমতি নেই। প্রায় আড়াই হাজার বছরের পুরনো এই জনপদে রয়েছে গোকুল মেধ, খোদার পাথরভিটা, শাহ সুলতান বলখির মাজার, এবং প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘরসহ অসংখ্য ঐতিহাসিক স্থান। এটি বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা।
শুধু ইতিহাসই নয়, প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্যও রয়েছে প্রেম যমুনা ঘাট, যা সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর বুকে জেগে ওঠা বালুচরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে প্রতিবছর এখানে আসে হাজারো মানুষ। অন্যদিকে, ‘নতুন জাফলং’ নামে পরিচিত শেরপুর উপজেলার বাঙালি নদীর তীরও হয়ে উঠেছে তরুণদের আড্ডার নতুন কেন্দ্র।
ধর্মপ্রাণ দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে মুঘল স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন খেরুয়া মসজিদ। এছাড়াও, রাজকীয় ইতিহাসের সাক্ষী পরশুরাম প্যালেস ও নলডাঙ্গা রাজবাড়ি ইতিহাসপ্রেমী পর্যটকদের বিশেষভাবে টানে।
বগুড়ার আধুনিক পর্যটন স্পটগুলোর মধ্যে মোমো ইন ইকো পার্ক অ্যান্ড রিসোর্ট, হোটেল নাজ গার্ডেন, পর্যটন মোটেল, এবং নর্থওয়ে মোটেল অন্যতম। এসব স্থানে পরিবার-পরিজন নিয়ে সময় কাটানো যায় নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে।
তবে পর্যটকদের দাবি, এসব দর্শনীয় স্থান ঘিরে আরও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা যেমন: শৌচাগার, বসার জায়গা, শিশুদের খেলাধুলার স্থান, খাবারের দোকান এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা গেলে বগুড়া হতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র।
স্থানীয় এক ট্যুর গাইড বলেন, “শুধু মহাস্থানগড়েই প্রতিদিন হাজারেরও বেশি দর্শনার্থী আসে। যদি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা আর কিছু বিনোদনমূলক সুবিধা যোগ করা হয়, তাহলে বগুড়া হয়ে উঠবে দেশের ‘নেক্সট কক্সবাজার’।”
পর্যটনের এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে চাই পরিকাঠামো উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা এবং ঐতিহ্যের সঠিক সংরক্ষণ।