- নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ২১ মে,মঙ্গলবার,আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক চা দিবস।চা শুধু একটি পানীয় নয় বরং এটি একটি ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং জীবিকার প্রতীক। “Tea for Better Lives” শীর্ষক প্রতিপাদ্যে এ বছরের দিবসটি চা শিল্পে যুক্ত কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের আহ্বান জানাচ্ছে।
চায়ের ইতিহাস প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো। জনশ্রুতি অনুসারে, খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩৭ সালে চীনের সম্রাট শেন নুং গরম পানি পান করার সময় দুর্ঘটনাবশত কিছু চা পাতা পড়ে যায় সেই পানিতে। এর রঙ, গন্ধ ও স্বাদ সম্রাটের ভালো লাগলে জন্ম নেয় আজকের চা।
ভারতে চা চাষ শুরু হয় ১৮২৪ সালে ব্রিটিশদের মাধ্যমে। পরে দার্জিলিং, আসাম ও নীলগিরিতে তা ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে চায়ের ইতিহাস শুরু হয় ১৮৪৯ সালে সিলেটের মালনীছড়ায়। বর্তমানে দেশের প্রায় ১৭০টি চা বাগানে হাজার হাজার শ্রমিক চা উৎপাদনে নিয়োজিত আছেন।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রথম চা দিবস পালিত হয় ২০০৫ সালে ভারতের দিল্লিতে। জাতিসংঘ ২০১৯ সালে ২১ মে তারিখটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘আন্তর্জাতিক চা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই দিবসের লক্ষ্য হলো চা চাষিদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা, টেকসই চা উৎপাদনকে উৎসাহ দেওয়া এবং চা’র বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক ও স্বাস্থ্যগত গুরুত্ব তুলে ধরা।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৩ কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে চা শিল্পের সঙ্গে জড়িত। চীন, ভারত, কেনিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশসহ অনেক দেশেই চা একটি প্রধান অর্থকরী ফসল। শুধু অর্থনীতি নয়, সামাজিক বন্ধন ও আতিথেয়তার প্রতীক হিসেবেও চা বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।
চীনের ‘গংফু চা’ অনুষ্ঠান, জাপানের ‘মাচা’, ভারতের ‘মসলা চা’, তুরস্কের ‘চায়’ কিংবা বাংলাদেশের অলিগলির চায়ের দোকান,সব জায়গায়ই চা এক অনন্য সামাজিক সংস্কৃতি সৃষ্টি করেছে।
চা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ চা বোর্ড, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি পালন করছে। রয়েছে আলোচনা সভা, প্রদর্শনী, চা পরিবেশন ও চা শ্রমিকদের অধিকার বিষয়ক সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান।
এক কাপ চা শুধু ক্লান্তি দূর করে না, এটি হাজারো জীবনের অবলম্বন, সংস্কৃতির বাহক। আন্তর্জাতিক চা দিবস সেই চা’কে ঘিরেই উদযাপন ও কৃতজ্ঞতা জানানোর একটি দিন।