Homeআন্তর্জাতিকইউক্রেনে ড্রোন হামলা কয়েক গুণ বাড়িয়েছে রাশিয়া, চাপে প্রতিরক্ষা ও জনজীবন

ইউক্রেনে ড্রোন হামলা কয়েক গুণ বাড়িয়েছে রাশিয়া, চাপে প্রতিরক্ষা ও জনজীবন

জুন মাসে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া নাটকীয়ভাবে ড্রোন হামলা বাড়িয়েছ। এতে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ক্লান্ত সাধারণ নাগরিক ও চাপে থাকা বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ওপর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। ইউক্রেন বলছে, তারা ক্রমবর্ধমান এ হামলার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে ও পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত হচ্ছে। ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় চলা যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যেই কিয়েভ তাদের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে সহযোগী দেশগুলো থেকে আরো বেশি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউক্রেন বিমানবাহিনীর তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাশিয়া জুন মাসে ইউক্রেনে মোট পাঁচ হাজার ৪৩৮টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালিয়েছে। ২০২২ সাল থেকে চলা যুদ্ধে এক মাসে চালানো রাশিয়ার সর্বোচ্চসংখ্যক ড্রোন হামলা এটি। এই হামলা মে মাসে চালানো তিন হাজার ৯৭৪টি হামলার চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি। এ ছাড়া মস্কোর সেনাবাহিনীও ২৩৯টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে, যা এক মাস আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

পাশাপাশি রাশিয়া এ মাসে প্রায় ২৩৭টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যেটিও আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, এই ড্রোনগুলো তার দেশের সামরিক শক্তির অবিচ্ছেদ্য অংশ। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ক্রেমলিনের এক বৈঠকে তিনি সাঁজোয়া যান, সুরক্ষিত অবস্থান ও কর্মীদের ওপর রুশ ড্রোন হামলার কথা তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি ড্রোন হামলা ইউক্রেনের সামরিক স্থাপনা ও যন্ত্রাংশকে ধ্বংস ও দূর্বল করেছে।

সামরিক বাহিনী একটি পৃথক ড্রোন ইউনিট তৈরি করেছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি বলেন, ‘এগুলোর সক্ষমতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে।’তবে রাশিয়ার বৃহত্তর সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য ইউক্রেন তার প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে মানিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে এবং ক্রমবর্ধমান রুশ ড্রোন হামলা মোকাবেলার পদ্ধতিও পরিবর্তন করেছে। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ গত সপ্তাহে সাংবাদিকদের জানান, তারা প্রতিরোধী ড্রোনসহ নতুন আধুনিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রকাশ করা হচ্ছে না।

ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মে মাসে রাশিয়ার ছোঁড়া প্রায় ৮১ শতাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রকে প্রতিরোধ করেছে।
এমনকি জুন মাসে কিয়েভের প্রতিরোধের হার বেড়ে ৮৬ শতাংশে পৌঁছেছে। যেহেতু ইউক্রেন হামলার শিকার হওয়া লক্ষ্যবস্তুর তথ্য গোপন রাখে, তাই রাশিয়ার হামলা ঠিক কী পরিমাণ প্রভাব ফেলেছে তা বোঝা কঠিন। তবে জুন মাসে দেশটির রাজধানী কিয়েভে অন্তত চারটি মারাত্মক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে বলে জানায় দেশটির জরুরি পরিষেবা বিভাগ। এটি মে মাসের হামলায় দুজন নিহত হওয়ার তুলনায় অনেক বেশি।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ হামলা বন্ধ করতে রাশিয়ার দেওয়া কঠিন শর্ত কিয়েভকে মেনে নিতে বলেছেন। ড্রোন হামলা বাড়ানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এএফপিকে বলেন, ‘কিয়েভ ভালোভাবেই জানে কী করলে যুদ্ধ বন্ধ হবে।’ তবে কিয়েভ জানিয়েছে, মস্কোর ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়া, পশ্চিমা সামরিক সহায়তা বন্ধের মতো যুদ্ধবিরতির শর্তগুলো মেনে নেওয়া মূলত আত্মসমর্পণের শামিল।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments