নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশে আম শুধু একটি মৌসুমি ফল নয়,এটি এখন অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। ২০২৫ সালে দেশটির আম খাত পেয়েছে এক নতুন গতি। রেকর্ড উৎপাদনের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো চীনের বাজারে রপ্তানির সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশি আম,যা কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১০০টিরও বেশি জাতের আম পাওয়া যায়। এর মধ্যে ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি, হারিভাঙ্গা, গোপালভোগ, আশ্বিনা, গৌড়মতি ও সূর্যপুরী বেশ জনপ্রিয়।কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্ভাবিত বারি আম-৪, ৫, ১১ সহ বারোমাসি জাতগুলোও বাণিজ্যিকভাবে সফল হচ্ছে।
২০২৫ সালে প্রায় ২ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ মেট্রিক টন, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
রপ্তানি খাতেও রয়েছে ইতিবাচক অগ্রগতি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ প্রায় ১,৩২১ টন আম ২১টি দেশে রপ্তানি করেছে।
চীনের বাজারে বাংলাদেশের আম প্রবেশের প্রস্তুতি সম্পন্ন। আগামী ২৮ মে আনুমানিক ৫০ টন আম রপ্তানি করা হবে চীনে,যা দেশের রপ্তানি ইতিহাসে প্রথমবার ঘটছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও রপ্তানিকারকরা সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। চীনের GACC থেকে অনুমোদন পাওয়া, হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট, উন্নত প্যাকেজিং ও মান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ,সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দ্রুত ও নিরাপদ পরিবহন এবং আন্তর্জাতিক মান রক্ষা করে বাজারজাতকরণের ওপর জোর দেওয়া প্রয়োজন।
এই বছর আম খাতে যে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে, তা নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য।শুধু ঘ্রাণ ও স্বাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়,বাংলাদেশের আম এখন দেশের ভাবমূর্তি ও রপ্তানি সক্ষমতারও প্রতীক হয়ে উঠছে।