নিজস্ব প্রতিবেদকঃকোরবানির সময় যতই ঘনিয়ে আসে, ততই জমে ওঠে গরুর হাট। চোখ ধাঁধানো আলোর ঝলক, বিশালাকৃতির গরু,সব মিলিয়ে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। কিন্তু এই উৎসবের ভিড়েই লুকিয়ে থাকে কিছু ফাঁদ। অসুস্থ গরু,কৃত্রিমভাবে মোটা করা পশু,বয়স কম থাকা সত্ত্বেও কোরবানিযোগ্য বলে দাবি,এসব কারণে অনেকেই ঠকে যান।
তবে হাটে যাওয়ার আগে যদি কিছু সহজ উপায় জেনে রাখা যায়, তাহলে খুব সহজেই চেনা যায় কোন গরুটি আসলেই ভালো।
প্রথমেই চোখের দিকে তাকানো যেতে পারে। সুস্থ গরুর চোখ হবে উজ্জ্বল, স্বচ্ছ আর সজীব। চোখ যদি ঝাপসা হয়, পানি পড়ে, বা নিস্তেজ মনে হয়,তবে বুঝে নিতে হবে গরুটি হয়তো অসুস্থ।
এরপর দাঁতের দিকে নজর দিন।কোরবানির জন্য সাধারণত দুই বছর বয়সী গরু উপযুক্ত। এই বয়সে গরুর নিচের চোয়ালে চারটি স্থায়ী দাঁত দেখা যায়। দাঁতের গঠন ও রঙ দেখে গরুর বয়স ও খাওয়াদাওয়ার অবস্থা সহজেই বোঝা যায়।
গরুর শরীরের লোম ও ত্বক অনেক কিছু বলে দেয়। সুস্থ গরুর লোম হবে মসৃণ ও ঝকঝকে। শরীরে খসখসে ভাব, বেশি পরিমাণে লোম ঝরার প্রবণতা বা ত্বকে ঘা থাকলে বুঝতে হবে এটি সুস্থ নয়।
চলাফেরায় প্রাণচাঞ্চল্য থাকা সুস্থ গরুর স্বভাব। যদি কোনো গরু একেবারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে বা খাবারে আগ্রহ না দেখায় তবে তা চিন্তার বিষয় হতে পারে।
একটু সময় নিয়ে লক্ষ্য করুন, পেট ও পায়খানার রাস্তার দিকেও। পেট যদি অস্বাভাবিকভাবে ফোলা থাকে বা গরু বারবার পাতলা মল ত্যাগ করে তাহলে তার হজমে সমস্যা আছে বলেই ধরে নিতে হবে। সুস্থ গরুর মল সাধারণত শক্ত এবং গাঁটযুক্ত হয়।
শ্বাসপ্রশ্বাস গুরুত্বপূর্ণ। যদি গরু হেঁচকি তোলে, কাশি দেয় বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে সেটা অসুস্থতার লক্ষণ।
সবচেয়ে জরুরি একটি দিক হলো শরীরে ইনজেকশনের চিহ্ন বা অস্বাভাবিক ফোলা অংশ রয়েছে কি না সেটা খেয়াল করা। অনেক সময় গরুকে হরমোন দিয়ে কৃত্রিমভাবে মোটা দেখানো হয়। এই ধরনের গরু সাধারণত অস্বাভাবিক রকমের ভারী হয়।
সতর্ক হলে ঠকে যাওয়ার সুযোগ থাকে না। একটুখানি মনোযোগ আর সচেতনতা আপনাকে বাঁচাতে পারে বড় ধরণের ক্ষতি থেকে। কোরবানির পশু কেনা শুধু একটা কেনাকাটা নয়,এটা ইবাদতের অংশ। তাই তাড়াহুড়া নয়,সময় নিয়ে যাচাই করে গরু কেনাই হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।