Homeজাতীয়গাইবান্ধা জেলার পর্যটন: সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

গাইবান্ধা জেলার পর্যটন: সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত

গাইবান্ধা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ জেলা। এ জেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদীভিত্তিক জীবনধারা ও বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থান এখন পর্যটকদের কাছে ধীরে ধীরে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার বালাসীঘাট অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র। যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই ঘাটটি নৌবন্দর হিসেবেও পরিচিত। বর্ষায় যখন যমুনা ফুলে-ফেঁপে ওঠে, তখন এই ঘাটে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্তের দৃশ্য উপভোগ করা সত্যিই এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মাস্তা মসজিদ ও শাহ্ সুলতান গাজীর মসজিদ গাইবান্ধার ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। এছাড়াও ভরতখালি কালী মন্দির, দাড়িয়াপুরের প্রাচীন মন্দির ও বিভিন্ন ধর্মীয় স্থান স্থানীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধ নিদর্শন বহন করে।
গাইবান্ধা পৌর পার্ক শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের জন্য একটি সুন্দর বিনোদন কেন্দ্র। এছাড়া এসকেএস ইন রিসোর্ট ও ড্রিমল্যান্ড এডুকেশনাল পার্ক পরিবার নিয়ে ভ্রমণের জন্য দারুণ উপযোগী।
ফুলছড়িতে অবস্থিত ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার শুধু একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রই নয়, এটি একটি শিল্পকর্মও। স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করে নির্মিত এই স্থাপনাটি ২০১৬ সালে আগা খান আর্কিটেকচারাল অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। এর ডিজাইন এবং পরিবেশবান্ধব চিন্তাভাবনা পর্যটকদের নজর কেড়ে নেয়।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় নির্মিত হয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র, যা পর্যটনের পাশাপাশি পরিবেশ সচেতনতা ও প্রযুক্তির উন্নয়নকেও তুলে ধরে। এমন উদ্যোগ পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে।
তবে পর্যটন বিকাশে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। অবকাঠামোগত দুর্বলতা, যাতায়াতের অসুবিধা ও তথ্যের অভাবের কারণে অনেক জায়গা এখনও পর্যাপ্ত পরিচিত নয়। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, স্থানীয় উদ্যোক্তা এবং তরুণ প্রজন্মের সক্রিয় অংশগ্রহণ পর্যটন শিল্পকে আরও বেগবান করতে পারে।
গাইবান্ধা এখন আর শুধু কৃষির জেলা নয় বরং ঐতিহ্য, প্রকৃতি আর নবীন উদ্যোগ মিলিয়ে একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন গন্তব্যে রূপ নিতে চলেছে। পর্যটকরা এখানে এসে নদী, চর, ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং আধুনিক বিনোদনের এক অসাধারণ সংমিশ্রণ উপভোগ করতে পারবেন।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments